অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম-মোবাইল দিয়ে ট্রেনের টিকিট কিভাবে কাটে

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম সম্পর্কে অনেক ভাই ও বোন জানতে চান। যারা ট্রেনে যাতায়াত করেন কিন্তু কিভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটতে হয় সে সম্পর্কে জানেন না আজকের এই পোস্টটি তাদের জন্য। 

অনলাইনে-ট্রেনের-টিকিট-কাটার-নিয়ম

কারণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা  অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করব। আশা করি আজকের এই পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হবেন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম

অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম

আপনি যদি অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কিভাবে কাটতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। বর্তমানে আমরা বিভিন্ন সময়ে ট্রেনে যাতায়াত করে থাকি।
কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় না, তখন আমাদের অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এই সমস্যা দূর করতে আপনি অনলাইনে ভ্রমণের কয়েকদিন আগেই ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন। ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য বেশ কয়েকটি মাধ্যম সেগুলো হল
  • অ্যাপ এর মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটা
  • ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটা
  • বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটা
আর নিচে এদের মাধ্যমে কিভাবে ট্রেনের টিকিট  কাটা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আপনি পুরো পোস্ট টি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। আশা করি আপনি পুরো আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবেন।

অ্যাপস এর মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম 

অ্যাপস এর মাধ্যমে খুব সহজেই ট্রেনের টিকেট কাটা যায়। ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য প্রথমে আপনাকে গুগল প্লে স্টোর থেকে রেল সেবা অ্যাপসটি ডাউনলোড করতে হবে। অ্যাপসটি ডাউনলোড করা হয়ে গেলে আপনাকে আপনার ইমেইল এড্রেস, ফোন নাম্বার, নাম, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করা হয়ে গেলে 
অ্যাপস-এর-মাধ্যমে-ট্রেনের-টিকিট-কাটার-নিয়ম-সম্পর্কে-বিস্তারিত-জানুন
আপনার ইমেইলে একটি ভেরিফিকেশন লিংক আসবে সেখানে ক্লিক করে আপনাকে আপনার একাউন্ট সচল করতে হবে। একাউন্ট সচল করা হয়ে গেলে আপনার প্রোফাইল সম্পন্ন করতে হবে অর্থাৎ আপনার অ্যাকাউন্ট সম্পন্ন করতে আরো যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হবে সেগুলো আপনাকে দিতে হবে। প্রোফাইল সম্পন্ন করতে যে সকল তথ্যগুলো দিতে হয় সেগুলো হল
  • ইমেইল এড্রেস
  • ফোন নাম্বার
  • নাম
  • পাসওয়ার্ড
  • জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ ইত্যাদি।
রেল সেবা অ্যাপে আপনার একাউন্ট করা হয়ে গেলে আপনি এই অ্যাপে লগইন করে ট্রেনের টিকিট কাটা, ট্রেনের সময়সূচী, ও ভাড়া কত টাকা এবং কত নাম্বার বগিতে সিট ফাঁকা আছে সে সম্পর্কে জানতে পারবেন। আপনি যদি টিকিট কিনতে চান তাহলে আপনাকে পারচেজ লেখার উপর ক্লিক করতে হবে। এখানে ক্লিক করলে আপনি ট্রেনের যাবতীয় তথ্য যেমন ট্রেনের যাত্রা কয়টায় শুরু হবে,

ট্রেনের শেষের স্টেশন কোনটি, ট্রেনের যাত্রী সংখ্যা, ট্রেনের আসন যেমন শোভন চেয়ার, শোভন, স্নিগ্ধা, এসি, কেবিন ইত্যাদি দেখতে পাবেন। এখান থেকে আপনার আসন নির্বাচন করতে হবে। তাহলে আপনি সেই তারিখে কোন কোন ট্রেন রয়েছে, কোন ট্রেনের আসন ফাঁকা রয়েছে, ট্রেন কয়টায় স্টেশন থেকে ছাড়বে এ সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আপনার সিট নির্বাচন করা হয়ে গেলে আপনি সেখানে কন্টিনিউ লেখার উপরে ক্লিক করুন।

তাহলে আপনাকে ট্রেনের ভাড়া সহ ব্যাংক চার্জ ও ভ্যাট সহ কত টাকা খরচ হবে তা দেখাবে। সেখান থেকে আপনি "pay now" অপশনে ক্লিক করলে পেমেন্ট করার মেথড চলে আসবে। সেখান থেকে আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আপনি পেমেন্ট করতে পারবেন যেমন রকেট, বিকাশ, নগদ, মাস্টার কার্ড ইত্যাদি। এগুলোর যে কোন একটি নির্বাচন করে অ্যাকাউন্ট নাম্বার ও পিন নাম্বার দিল আপনার ফোনে একটি কোড আসবে।
এই কোডটি দিয়ে ভেরিফিকেশন করলেই আপনার টিকিট কেনা হয়ে যাবে। সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের মধ্যে আপনাকে আপনার ইমেইলের মাধ্যমে টিকেটপাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেখান থেকে আপনি হিস্টরিতে ক্লিক করে আপনার টিকেট ডাউনলোড করে নিবেন। এই টিকিটটি ট্রেনে ওঠার পরে স্টেশন মাস্টারকে দেখাতে হবে। টিকিট দেখাতে আপনি ব্যর্থ হলে আপনাকে জরিমানা করা হবে। 

একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কাটতে পারবেন এবং সপ্তাহে দুইবারের বেশি একই একাউন্ট দিয়ে টিকিট কাটা যাবে না। আশা করি আপনি কিভাবে ট্রেনের টিকিট অনলাইনে অ্যাপের মাধ্যমে কাটতে হয় সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। নিচে আমরা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। সে সম্পর্কে জানতে চাইলে পড়তে থাকুন। 

ওয়েব সাইটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম

ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম সম্পর্কে অনেক ভাই ও বোন জানতে চান। আপনি যদি এ বিষয়ে জানতে চান তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ আর্টিকেলের এই অংশে আমরা এখন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কিভাবে ট্রেনের টিকিট কাটা যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করব। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটা অনেক সহজ। 

বাংলাদেশে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-সেবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটা যায়। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য আপনাকে প্রথমেই বাংলাদেশের রেলওয়ের ই-সেবা ওয়েব সাইটে প্রবেশ করতে হবে। তারপর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আপনাকে আপনার নাম gmail address মোবাইল নাম্বার পাসওয়ার্ড ইত্যাদি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

রেজিস্ট্রেশন করা সম্পূর্ণ হলে আপনাকে জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে। যদি কোন কিছু ভুল হয় তাহলে সেগুলো জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী ঠিক করে নিতে হবে। একাউন্ট করা হয়ে গেলে তারপর আপনি সেখান থেকে ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন। টিকিট কাটার জন্য আপনাকে আপনার আসনের ধরন এবং আপনার যাত্রার শুরুর স্থান হতে যাত্রা শেষের স্থান কোথায় সেটা নির্বাচন করতে হবে।

তাহলে আপনি ট্রেনের তারিখ ও সময়সূচী অর্থাৎ সেদিন আপনার যাত্রার স্টেশনে স্টেশন থেকে কোন কোন ট্রেন ছাড়বে সেই তারিখে তা আপনি দেখতে পাবেন। ট্রেনের কোন টিকেটগুলো এখনো  অবিকৃত হয়েছে তা জানার জন্য ডিটেলস অপশনে ক্লিক করুন তারপর সেখান থেকে এভেলেবিলিটি অপশনে ক্লিক করলে আপনিযে টিকিটগুলো এখনও ক্রয় করা হয় নাই সেগুলো দেখতে পাবেন।
এবং সেখানে আপনি ট্রেনের ভাড়াও দেখতে পাবেন। সেখান থেকে আপনি আপনার আসন্ন নির্বাচন করে টিকিট কাটতে পারবেন। তারপর purchase অপশনে ক্লিক করলে  আপনার একাউন্ট থেকে আপনার একাউন্ট থেকে ভাড়ার সমপরিমাণ টাকা কেটে নিয়ে অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে আপনার যে gmail ঠিকানায় টিকিট পাঠিয়ে দিবে।

আমার এক বন্ধু কাজের জন্য ট্রেনে ভ্রমণ করে থাকেন। সে বেশিরভাগ সময়ই ওয়েবসাইট থেকে টিকিট সংগ্রহ করে থাকেন। এতে করে তাকে আর স্টেশনে গিয়ে টিকিট সংগ্রহ করতে হয় না। হলে তার অনেক সময় বেঁচে যায়। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কিভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটা যায়। 

বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম

ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য দিন দিন বিকাশ অ্যাপ একটি জনপ্রিয় মাধ্যমে উঠছে। বর্তমানে খুব সহজেই আপনি বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করে ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন। ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য প্রথমে আপনাকে বিকাশ অ্যাপ এ প্রবেশ করতে হবে। তারপর অ্যাপের মধ্যে টিকিট আইকন থেকে ট্রেন নির্বাচন করতে হবে। সেখানে বাংলাদেশ রেলওয়ের ই টিকেট সার্ভিস লেখা অপশন দেখতে পাবেন।
বিকাশ-অ্যাপের-মাধ্যমে-ট্রেনের-টিকিট-কাটার-নিয়ম
এখানে আপনি আপনার যাত্রার স্থান, যাত্রার শেষ গন্তব্য, আপনার যাত্রা তারিখ, টিকিটের সংখ্যা, টিকিটের ধরন ইত্যাদি এসব তথ্য দিতে হবে। আপনি যে ট্রেনে ভ্রমণ করবেন সেই ট্রেনের purchase  অপশনে যেতে হবে তারপর আপনাকে রেলওয়ের ওয়েবসাইট অথবা রেলওয়ের ই সেবা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধিত আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। তাহলে আপনার সামনে আপনার ট্রেন ভাড়া পরিশোধের অপশন আসবে সেখান থেকে আপনাকে ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।

ভাড়া পরিশোধের সময় যে নম্বর দেবেন সে নম্বরে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে। এই ভেরিফিকেশন কোড এবং পিন নম্বর দিলে আপনার টিকিট কাটা সম্পন্ন হয়ে যাবে। তারপর ৩০ মিনিটের মধ্যে আপনার ইমেইলের মাধ্যমে আপনার টিকিট পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার রেলওয়ে ওয়েবসাইট অথবা রেলওয়ের ই-সেবা অ্যাপে নিবন্ধন থাকতে হবে। আশা করি আপনি পুরো বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। 

অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর (FAQ)

  • প্রশ্নঃ অনলাইনে কত ঘন্টা আগে টিকিট বুকিং করা যায়?
  • উত্তরঃ ট্রেন ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের চার ঘন্টা আগ পর্যন্ত অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বুকিং করতে পারবেন।
  • প্রশ্নঃ ট্রেনের টিকিট কাটার ওয়েবসাইট কোনটি?
  • উত্তরঃ ট্রেনের টিকিট কাটার ওয়েবসাইট হচ্ছে esheba.cnsbd.com অথবা রেল সেবা অ্যাপস।
  • প্রশ্নঃ ট্রেনে বাচ্চাদের টিকিটের বয়স কত?
  • উত্তরঃ বাংলাদেশ রেলওয়ের হিসাব অনুযায়ী ৩ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের ট্রেনে যাতায়াতের জন্য কোন টিকিটের প্রয়োজন হয় না। তিন থেকে বারো বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুদের টিকিটের অর্ধেক ভাড়া দিতে হবে (তবে এটি দ্বিতীয় শ্রেণীর আসনের জন্য শুধু প্রযোজ্য)। এবং 12 বছর এর বেশি যাদের বয়স তাদের প্রত্যেককেই নির্ধারিত ভাড়া প্রদান করতে হবে।
  • প্রশ্নঃ বাংলাদেশ রেল সেবা হেল্পলাইন নাম্বার কত?
  • উত্তরঃ বাংলাদেশ রেল সেবা হেল্পলাইন নাম্বার হল ১৩১।

লেখকের মন্তব্যঃ অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম

আজকের এই আর্টিকেলে আমরা মোবাইল ফোন দিয়ে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। মোবাইল ফোন দিয়ে আপনি রেলওয়ের ই সেবা অ্যাপ ব্যবহার করে, রেলের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অথবা বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন।

আজকের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।এরকম আরো প্রয়োজনীয় ও তথ্যবহুল দেশের ভিতরে ভ্রমণ ও প্রবাস ভ্রমণ সম্পর্কিত আর্টিকেল পেতে আমাদের Briefer IT ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। আজকের এই পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিন। যাতে তারা পোস্টটি পড়ে উপকৃত হতে পারেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url